কংগ্রেস-আপ জোট ব্যর্থ কেন? দীপেন্দ্র হুডার বক্তব্য প্রকাশিত
Categories
News politics

কংগ্রেস-আপ জোট ব্যর্থ কেন? দীপেন্দ্র হুডার বক্তব্য প্রকাশিত

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪,

কংগ্রেস সাংসদ দীপেন্দ্র সিংহ হুডা রবিবার প্রকাশ করলেন কেন কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি (আপ)-এর মধ্যে আসন্ন হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের জন্য পূর্বাভাস জোট গঠনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে হিন্দুস্তান টাইমসের কুমকুম চাধার সাথে কথা বলতে গিয়ে, হুডা জানিয়েছেন যে হরিয়ানায় আপ-এর মাটি শক্ত করার কোনও সাফল্য লাভ হয়নি, যা জোট আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার প্রধান কারণ।

হুডা বলেন, “আপ-এর হরিয়ানায় মাটির উপস্থিতি সীমিত। তারা এখানে তাদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা করেছে। তবে আপ নির্বাচনে সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। তারা কোনও ভোট শেয়ার পায়নি, তবুও আমরা তাদের লোকসভা নির্বাচনে একটি আসন দিয়েছিলাম।”

হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের আগে, কংগ্রেস এবং আপের মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছিল। হুডা জানান, “আমরা তাদের সাথে আলোচনা শুরু করেছিলাম, আমাদের দৃষ্টিতে আমরা একটি ন্যায্য সমীকরণ প্রস্তাব করেছিলাম। তবে যখন আমাদের আলোচনা চলছিল, আপ তাদের সমস্ত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে দেয়।”

এছাড়াও, পড়ুন: ভেজা গ্যাস শিল্পের জন্য ধুলো মনিটর

এই ঘটনা কংগ্রেসের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বিশেষ করে যখন জোটের মাধ্যমে ভোটারদের বৃহত্তর সমর্থন পাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তবে হুডা জানিয়েছেন, এই ঘটনা কংগ্রেসের নির্বাচনী সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না। তিনি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন যে হরিয়ানার মাটিতে কংগ্রেস শক্তিশালী এবং জোট ছাড়াই তারা নির্বাচনে সফল হবে।

জোট আলোচনা এবং এর ব্যর্থতার কারণ

হুডার বক্তব্য অনুযায়ী, আপ এবং কংগ্রেসের মধ্যে আলোচনা বেশ ভালোভাবে শুরু হয়েছিল। আপ-কে কংগ্রেস একটি আসন দিয়েছিল এবং কংগ্রেস চেয়েছিল আপকে আরও সুযোগ দেওয়া হোক। তবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যখন সমীকরণগুলি নির্ধারণ করা হচ্ছিল, তখন আপ পক্ষ থেকে তাদের প্রার্থীদের ঘোষণা দেওয়া শুরু করে। এই পদক্ষেপ কংগ্রেসকে হতবাক করে এবং জোট আলোচনা বিফল হয়ে যায়।

হুডা বলেন, “আমরা আপকে একত্রিত করতে চেয়েছিলাম। তবে তারা আমাদের প্রস্তাবের প্রতি সাড়া না দিয়ে তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয় এবং সমস্ত প্রার্থীর তালিকা ঘোষণা করে। এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে আমরা বুঝতে পেরেছি যে জোট সম্ভব হবে না।”

আপ-এর মাটির শক্তি এবং কংগ্রেসের আত্মবিশ্বাস

দীপেন্দ্র সিংহ হুডা স্পষ্ট করে দেন যে আপ হরিয়ানায় কোনও উল্লেখযোগ্য মাটি শক্ত করতে পারেনি। তার ভাষায়, “আপ হরিয়ানায় ভোট শেয়ার লাভ করতে পারেনি। তাদের প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়, তবে তারা এখনও মাটির পরিসরে শক্তিশালী নয়। কংগ্রেসের শক্তি যথেষ্ট, এবং আমরা এককভাবে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।”

হুডার মতে, কংগ্রেস হরিয়ানার মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তিনি বলেন, “হরিয়ানায় কংগ্রেসের মাটির উপস্থিতি দৃঢ়। আমরা একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারব এবং জোটের অভাব আমাদের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করবে না।”

আপের প্রতিক্রিয়া

এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আপ-এর হরিয়ানা প্রধান, অনিল কুমার, সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমরা হরিয়ানার মাটিতে কাজ করছি এবং কংগ্রেসের তুলনায় আপ-এর গ্রহণযোগ্যতা ধীরে ধীরে বাড়ছে। আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণে স্থির রয়েছি এবং নির্বাচনে জনগণের সমর্থন পাব বলে আশাবাদী।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত

এই জোট ভাঙনের বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিভিন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেস ও আপ-এর মধ্যে মাটি শক্ত করার প্রতিযোগিতা চলছিল, যার ফলশ্রুতিতে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। হরিয়ানায় নির্বাচনী দিক থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে, কারণ জোট না হলে কংগ্রেসকে প্রতিযোগিতায় এককভাবে লড়তে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, এই জোট ব্যর্থতার পর কংগ্রেসের নির্বাচন কৌশল আরও মজবুত করতে হবে, যাতে তারা আপের মতো অন্য কোনও দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লড়াই করতে সক্ষম হয়।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

জোট ব্যর্থ হওয়ার পরও হরিয়ানায় কংগ্রেস ও আপের নিজস্ব অবস্থানগুলি মজবুত রাখতে হবে। নির্বাচনী দৌড়ে আপ-এর জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে, কারণ কংগ্রেস ইতিমধ্যেই মাটি শক্ত করে রেখেছে। তবে আপ-এর জন্য এই ঘটনাটি তাদের সংগঠন মজবুত করার সুযোগ হতে পারে। তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক মানচিত্রে তাদের জায়গা শক্ত হবে।

দীপেন্দ্র সিংহ হুডা-র বক্তব্যের ভিত্তিতে এই স্পষ্ট যে কংগ্রেস নির্বাচনে আত্মবিশ্বাসী এবং জোটের প্রয়োজন ছাড়াই এককভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে প্রস্তুত। তবে হরিয়ানার মাটিতে শেষ পর্যন্ত কাকে সমর্থন দেবে জনগণ, সেটাই সময়ের সাথে বোঝা যাবে।

হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস এবং আপ-এর মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। দীপেন্দ্র সিংহ হুডা স্পষ্ট জানিয়েছেন, কংগ্রেস এককভাবে লড়াই করবে এবং জোটের অভাব তাদের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করবে না। হরিয়ানার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে এবং নির্বাচনী প্রতিযোগিতার ফলাফল জানার অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্যের জনগণ।

By আনোয়ারা আলী